‘বাবা, আর তো কেউ মা বলে ডাকবে না। শুটিংয়ের ফাঁকে নজরুলের জীবনী শোনাবে না। অভিভাবক হয়ে পাশে থাকবে না। কিছু জিনিস মেনে নেওয়া যায় না, আপনার মৃত্যুসংবাদটা যদি মিথ্যা হতো। কেন এভাবে চলে গেলেন বাবা। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। ওপারে ভালো থাকবেন বাবা।’
সাদেক বাচ্চুর মৃত্যুতে সোশ্যাল মিডিয়ায় এভাবেই শোক প্রকাশ করলেন তরুণ প্রজন্মের অভিনয়শিল্পী মৌ খান। এই চিত্রনায়িকা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমাকে তিনি মেয়ে মেয়ে বলে ডাকতেন। আমিও তাকে বাবা বলেই ডাকতাম।
শুটিংয়ের ফাঁকে, ডেকে খাবার খাইয়ে দিতেন। সময় পেলেই নানা ধরনের গল্প শোনাতেন। এখন শুটিংয়ে আমি আমার বাবাকে পাব না, এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। মনে হচ্ছে, আমার চারপাশ শূন্য হয়ে গেছে।
মৌ বলেন, ‘আমি নিজেও অসুস্থ, জ্বর-সর্দি লেগে রয়েছে। ঘুম থেকে উঠে এমন একটি খবর শুনে আমি থমকে গেছি, চমকে গেছি, আমার হৃদয় বিদীর্ণ হয়ে গেছে। আমি সত্যি বলছি- এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না। আমার দুটি ছবিতে তিনি আমার বাবা ছিলেন।
সেই থেকে তিনি যেন আমার সত্যিকার বাবাই হয়ে গেছেন। আমি যতই অসুস্থ থাকি, তাকে দেখতে যাব। জায়েদ ভাইয়াকে ফোন দিয়েছিলাম; কিন্তু উনি বলেন করোনার কারণে নেওয়া হবে না। আমি কি শেষ দেখাও দেখতে পারব না?’
সাদেক বাচ্চুর চলে যাওয়াটা যেন কেউই মেনে নিতে পারছেন না। সাদেক বাচ্চু যেমন আশি-নব্বইয়ের দশকের অভিনয়শিল্পীদের কাছে জনপ্রিয় শিক্ষকতুল্য, তেমনই এ সময়ের অভিনয়শিল্পীদের কাছেও জনপ্রিয়। যার ফলে একজন সাদেক বাচ্চুর চলে যাওয়ায় যেন অভিভাভবকশূন্য হয়ে পড়লেন দেশের চলচ্চিত্রশিল্পীরা।
সাদেক বাচ্চুর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ওমর সানী থেকে শুরু করে বুবলী, নিরব, আইরিন, আরেফিন শুভ, অমিত হাসান, জায়েদ খানসহ সব শ্রেণির শিল্পীরা। এ সময়ের তরুণ অভিনয়শিল্পী মৌ খান। চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে পা দিয়েই পেয়েছেন সাদেক বাচ্চুর মতো একজন অভিনয়ের শিক্ষককে।
মৌ খান ‘প্রতিশোধের আগুন’, ‘বাহাদুরি’ ছবিতে সাদেক বাচ্চুর সঙ্গে অভিনয় করেছেন। দুটি ছবিতে মৌয়ের বাবার ভূমিকায় ছিলেন এই গুণী অভিনেতা।